মধ্যনগর প্রতিনিধি :: ‘আমার দোকান চুরি অইয়া গেল, আমি প্রতিবন্ধী মানুষ, আমার সব শেষ অইয়া গেল।’ এভাবেই আহাজারি করছিলেন সুনামগঞ্জের মধ্যনগরের বংশীকুন্ডা বাজারের প্রতিবন্ধী ফল ব্যবসায়ী স্বদেশ সরকার (৩৮)। তিনি বংশীকুন্ডা দক্ষিণ ইউনিয়নের মাকড়দি গ্রামের মৃত উপেন্দ্র সরকারের ছেলে।
শুক্রবার দিবাগত রাতে উপজেলার বংশীকুন্ডা বাজারে ওই প্রতিবন্ধী ফল ব্যবসায়ীর দোকানে অমানবিক চুরির ঘটনাটি ঘটেছে। এতে তার প্রায় ৩৭ হাজার টাকার ফলমূল চুরি হয়েছে বলে জানা গেছে।
স্বদেশ বলেন, আমি প্রতিবন্ধী মানুষ। আমার স্ত্রী ও একমাত্র সন্তানও প্রতিবন্ধী। আমরা তো কারো কোনো ক্ষতি করি নাই। শুক্রবার বাজারের প্রতিবেশী এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ৩৭ হাজার টাকা ধার করে ফলের চালান কিনে আনি। শনিবার সকালে এসে দেখি রাতে আমার সব ফল চুরি হয়ে গেছে। আমি এখন আমার প্রতিবন্ধী পরিবার নিয়ে কী খাবো? কিভাবে চলবো? কিভাবে পরিশোধ করবো ধারের টাকা? কোনো কিছুই ভেবে পাচ্ছি না।
জানা যায়, বংশীকুন্ডা বাজারের একটি ক্লাব ঘরের বারান্দায় নিয়মিত ফলের দোকান পেতে বসেন প্রতিবন্ধী স্বদেশ সরকার। ক্লাব কর্তৃপক্ষ তাকে বিনা ভাড়ায় সেখানে ব্যবসা করতে দেন। প্রতিদিনের মতো শুক্রবার রাত ৯টার দিকে বিক্রি শেষে ৫টি ঝুড়িতে সব ফল সংরক্ষণ করে দোকানে তালা দেন স্বদেশ সরকার। শনিবার সকালে দোকান খুলে দেখেন গত রাতে রেখে যাওয়া ফলগুলো ঝুড়িতে নেই। দোকানের শাটার ভেঙে সব ফল চুরি হয়ে গেছে। এরপর খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে মধ্যনগর থানার পুলিশ।
বংশীকুন্ডা বাজারের বাসিন্দা সাইবুর রহমান বলেন, স্বদেশ একজন প্রতিবন্ধী মানুষ। যে বা যারা তার মতো প্রতিবন্ধী মানুষের মালামাল চুরি করেছে তাদের প্রতি ধিক্কার জানাচ্ছি। চুরির ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হোক।
বংশীকুন্ডা বাজার ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক এ বি এম জুয়েল তালুকদার বলেন, স্বদেশ সরকার আমাকে তার দোকান চুরি হওয়ার ঘটনাটি জানিয়েছে। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। আমরা বাজার ব্যবসায়ী মালিক সমিতি পুলিশ প্রশাসনকে অবগত করেছি।
মধ্যনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ এমরান হোসেন বলেন, আমি প্রতিবন্ধী স্বদেশ সরকারের দোকানের ফলমূল চুরি হওয়ার ঘটনাটি শুনেছি। ঘটনাস্থলে ফোর্স পাঠিয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Leave a Reply